নেছারাবাদ/স্বরূপকাঠি

স্বরূপকাঠিতে কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের বিক্ষোভ মিছিলঃ হামলা ও ভাংচুরে ইউনিয়ন সম্মেলন পন্ড

স্বরুপকাঠি প্রতিনিধিঃ

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার পৌরসভা, বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সম্মেলনকে এক পক্ষকে বাদ দেয়াকে কেন্দ্র করে স্বরূপকাঠি উপজেলা আওয়ামীলীগে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্যাগী ও পরিক্ষিত নেতাদের একটি বৃহৎ অংশ রয়েছে বাদপড়াদের মধ্যে। এক পক্ষের ওই সম্মেলন কার্যক্রমকে নিয়ম বহির্ভূত ও অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে মঙ্গলবার রাতে উপজেলা শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা, পৌর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের একটি বৃহৎ অংশের নেতাকর্মিরা।

তারা ওই দিন রাতে উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থনে গিয়ে শেষ করে। পরে সেখানে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুস সালাম সিকদার, শিক্ষা ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক কাজী সাইফুদ্দিন তৈমুর, ইউপি চেয়ারম্যান আল আমিন পারভেজ, শ্রমিকলীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম ফায়েজ, কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলাম বিপ্লব, যুবলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম রিপন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম মিন্টু প্রমুখ।

এসময় বক্তারা অভিযোগ করেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য একেএমএ আউয়াল ও তার অনুসারীরা বর্তমান সংসদ সদস্য মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. শাহ আলম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক এস এম মুইদুল ইসলাম সহ তাদের অনুসারী স্বরূপকাঠি উপজেলা আওয়ামীলীগের বহুদিনের ত্যাগী ও প্রকৃত পরিক্ষিত আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিদের বাদ দিয়ে বিভিন্ন নির্বাচনে নৌকার বিরোধীতাকারী হাউব্রিড আওয়ামীলীগকে নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সম্মেলনের আয়োজন করছে। এতে করে আওয়ামীলীগের প্রকৃত নেতাকর্মিরা কমিটি থেকে বাদ পড়ছেন এবং দল ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তারা অবিলম্বে এ ধরনের কার্যক্রম পরিহার করে প্রকৃত আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিদের নিয়ে সম্মেলন করার দাবী করেন অন্যথায় হাইব্রিডদের প্রতিহত করার ঘোষনা দেন তারা।

এদিকে গত সোমবার সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য একেএমএ আউয়ালের অনুসারীরা কুড়িয়ানা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আটঘর-কুড়িয়ানা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সম্মেলনের আয়োজন করে। বিকেলে সম্মেলন স্থলের মঞ্চ ও চেয়ার টেবিল ভাংচুর চালায় একপক্ষ। এ সময় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সম্পাদক বিধান চন্দ্র মৈত্রসহ ৪ জন হামলার শিকার হন। সম্মেলন স্থলে যাওয়ার পথে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও পিরোজপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান খালেক, অ্যাডভোকেট কানাই লাল বিশ্বাসসহ নেতৃবৃন্দ প্রতিপক্ষের বাধার মুখে মাহমুদকাঠি এলাকা থেকে ফিরে যেতে বাধ্য হন। দলের একপক্ষকে বাইরে রেখে অপর পক্ষ সম্মেলনের আয়োজন করার অভিযোগে ওই হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানান স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মো. জহির। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

বাধা পাওয়ার কথা স্বীকার করে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক অ্যাডভোকেট কানাই লাল বিশ্বাস বলেন, সম্মেলনে যাওয়ার পথে মাহমুদকাঠি বাজারে সড়কের উপর রিক্সা ভ্যান উল্টো রেখে আমাদের বাধা দেয়া হয়। এ সময় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারনে আমরা ফিরে আসতে বাধ্য হই। পরবর্তীতে জেলা কমিটির সভায় এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য গত ৪ ফেব্রুয়ারী উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি একেএমএ আউয়াল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. শাহ আলমের মধ্যে বাক বিতন্ডার কারনণ সভায় হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। পরে অধ্যক্ষ শাহ আলমের নেতৃত্বে উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের একটি বৃহৎ অংশ সভাস্থল ত্যাগ করে।

Comment here