নেছারাবাদ/স্বরূপকাঠি

চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ স্বরূপকাঠির কাঠ ব্যবসায়ীরা

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
নৌপথে চাঁদাবাজদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির কাঠ ব্যবসায়ী ও নৌযান মালিক-শ্রমিকরা। স্বরূপকাঠি থেকে নৌপথে উত্তরাঞ্চলে যেতে (মালবাহী কার্গো/ট্রলারে) ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদের ট্যাক্স; বিআইডব্লিউটিএ বার্দিং, পুলিশ, বন বিভাগের কাগজপত্র দেখার নামে চাঁদা, সন্ত্রাসী আর ডাকাতের চাঁদাবাজির কারণে বন্ধ হওয়ার উপক্রম স্বরূপকাঠির কাঠবাহী নৌযান চলাচল। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে ভোগান্তি ও নির্যাতনের মুখে পড়তে হয় ট্রলার মালিক-শ্রমিক এবং ব্যবসায়ীদের।

স্বরূপকাঠি থেকে ঢাকা পর্যন্ত ১২ পয়েন্টে ও স্বরূপকাঠি থেকে মিঠামইন যেতে ১৭ পয়েন্টে ট্রলার বা কার্গোপ্রতি ৮ থেকে ১৮ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। নৌপথে চাঁদাবাজদের অত্যাচার নির্যাতন বন্ধ করার দাবি জানিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন-নিবেদন ও পোস্টারিং করেছে কার্গো ট্রলার বাল্ক্কহেড শ্রমিক ইউনিয়ন ও নৌ পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন। চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যের কারণে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে ব্যবসা গুটিয়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন। কেউ কেউ ঋণগ্রস্ত হয়ে পথে বসেছেন। স্ব্বরূপকাঠির কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক জিয়াউল হক জানান, ক্রেতারা মোকামে কাঠ কেনার পর তাদের ট্রলার ভাড়া, লেবার খরচ, মিল খরচ, দোকান ভাড়া মিটিয়ে আসল চালান বের করা কঠিন হয়ে পড়ে। সেখানে কথিত ট্যাক্স আর চাঁদাবাজদের কারণে ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। তা ছাড়া মোকামে বাকি বিক্রি করে ব্যবসায়ীরা দিন দিন চালানশূন্য হয়ে পড়ছেন। তিনি বলেন ট্রলার বা কার্গোতে নিয়মিত ট্রিপ না হওয়ায় মালিকরা কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। কাঠ কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে স্বরূপকাঠি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে চর, মুক্তিযোদ্ধা চর, ইন্দুরহাটের ভাসমান কাঠের হাট, মাহামুদকাঠি, ডুবিসহ বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে কাঠের বিশাল বাজার। ওইসব হাটে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার কাঠ বেচাকেনা হয়। অপরদিকে কাঠ পরিবহনের জন্য স্বরূপকাঠিতে রয়েছে শত শত ছোট-বড় কার্গো ও ট্রলার। গড়ে উঠেছে শত শত স’ মিল, ফার্নিচার, ক্যারম ও ক্রিকেট ব্যাট তৈরিসহ বিভিন্ন কারখানা।

ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন ও আবদুল মতিন বলেন, কার্গো ট্রলারে মালপত্র পরিবহনে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজিসহ নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। স্বরূপকাঠি থেকে একটি ট্রলার বা কার্গোকে ঢাকার সাভার পর্যন্ত যেতে ১২টি পয়েন্টে সর্বনিম্ন ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। যদি কোনো নৌযান টাকা না দিয়ে চলে যায়, তাদের ধাওয়া করে রেটের দ্বিগুণ-তিনগুণ টাকা আদায় করা হয়। এ ছাড়াও আলুর বাজার এলাকায় সুরুজ বাহিনী, চাঁদপুর এলাকায় মুন্না বাহিনী, কালিপুরার মুখে করিম বাহিনী প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি করে। তাদের চাহিদা মতো টাকা দিতে রাজি না হলে সর্বস্ব কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

Comment here