মঠবাড়িয়া

মঠবাড়িয়ায় প্রবাসী ও মৃত ব্যক্তিরা পাচ্ছেন মৎস্য ভিজিএফঃ জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের জাটকা ধরা থেকে বিরত থাকা জেলেদের মাঝে মৎস্য ভিজিএফ এর চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রাঙ্গনে চাল বিতরণ না করে ১৫ কিঃ মিঃ দূরবর্তী পৌর শহরের খাদ্য গুদামে এনে কার্ডধারী প্রকৃত জেলেদের বাদ দিয়ে জেলে নয় এমন ব্যক্তি, প্রবাসী ও মৃত্যু ব্যক্তির নামে টোকেন দিয়ে চাল বিতরণ করেছে।
এতে চাল বঞ্চিত পেশাদার দুস্থ জেলেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা খাদ্য গুদামের সম্মূখ সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। ঘন্টাব্যাপী এ মানবন্ধনে ওই ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ডের শতাধিক জেলে অংশ নেয়। পরে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ওই এলাকার সমাজ সেবক মোশারেফ হোসেন শরীফ, ফরিদ মীর, ইউপি সদস্য জাকির হোসেন ও জেলে আল আমিন, জামাল হোসেন প্রমূখ।
বক্তারা ভিজিএফ চালের তালিকা প্রনয়নে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহীম খলিল ফরাজী ও প্যানেল চেয়ারম্যান খলিল মীর তাদের সহযোগী দুলাল কাজী ও মোশারফ কাজীর বির”দ্ধে অভিযোগ করে বলেন, টাকার বিনিময়ে পূর্বের ৫‘শ ৫৯ জন কার্ডধারী জেলে তালিকা হতে অধিকাংশ প্রকৃত জেলেদের নাম বাদ দিয়ে স্বচ্ছল, প্রবাসী ও মৃত্যু ব্যক্তিদের অন্তর্র্ভূক্ত করেছেন। আরও অভিযোগ আনেন ওই নতুন তালিকায় স্বচ্ছল ব্যক্তিদের মাঝে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার থেকে ফেব্রয়ারী ও মার্চ মাসের চাল বিতরণের খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার মঠবাড়িয়া পৌর শহরে এসে বিক্ষুদ্ধরা এর জোরালো প্রতিবাদ করেন।
সরকারের নীতিমালায় কোন প্রবাসী ভিজিএফ চালের সুবিধা পাবেনা উলে­খ থাকলেও গোলবুনিয়া গ্রামের আঃ হালিমের পুত্র কুয়েত প্রবাসী খলিল(২৮), ওই গ্রামের খোরশেদের পুত্র সেীদি প্রবাসী কবির (৪৫) এর স্বজনদের মাঝেও ৪০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয় বলে তারা জানান। এছাড়া ওই গ্রামের মৃত্যু হাশেম মীরের নামের চাল বিতরণেরও অভিযোগ করেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ ইউনিয়নে ৫‘শ ৬৯ জন কার্ডধারী জেলেদের মধ্যে জাটকা ধরা থেকে বিরত থাকা ৪শ’ জেলের মাঝে ফেব্রয়ারী ও মার্চ মাসের প্রত্যেককে ৪০ কেজি করে ১৬ মেঃ টন চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়।
ওই বরাদ্ধ পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যান প্রকৃত জেলেদের তালিকা বাদ দিয়ে তাদের অনুগতদের চাল বিতরণ করেন। আমড়াগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহীম খলিল ফরাজীর মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে প্যানেল চেয়ারম্যান খলিল মীর তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পূর্বের ৫‘শ ৬৯ জন কার্ডধারী জেলের মধ্যে ৪শ’ জনের অনুকূলে সরকারী ১৬ মেঃ টনঃ চাল বরাদ্ধ পাওয়ায় অনেকের নাম বাদ দেয়া হয়েছে।
ওই ইউনিয়নের সরকারী চাল বিতরণের দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহ আজম জানান, চাল বিতরণ নিয়ে তালিকা প্রনয়ন নিয়ে স্থানীয় জেলেদের দু গ্রুপের মধ্যে বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়। তবে তিনি তালিকা প্রনয়নের দায়িত্ব আমার নয় বল জানান। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, প্রকৃত জেলেদের নাম বাদ দেয়ার মৌখিক অভিযোগ শুনেছি।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের সঠিক তালিকা করে চাল বিতরণের নির্দেশ দিয়েছি।

Comment here