জানা-অজানা

ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম কর্ণধার ছিলেন কাপুর পরিবারের পিতৃব্য পৃথ্বীরাজ কাপুর

অনলাইন ডেস্কঃ
ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম কর্ণধার ছিলেন পৃথ্বীরাজ কাপুর। হিন্দি চলচ্চিত্র যখন নির্বাক, সাদা কালো, তখনই বোম্বেতে অভিনয়ের স্বপ্ন নিয়ে চলে আসেন পৃথ্বীরাজ কাপুর।পৃথ্বীরাজ কাপুর ৩ নভেম্বর ১৯০৬ সালে ব্রিটিশ ভারতে পাঞ্জাব প্রদেশের সামুন্দ্রিতে একটি পাঞ্জাবি হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বশেশ্বরনাথ কাপুরের জ্যেষ্ঠ পুত্র।

পৃথ্বীরাজ কাপুর ছিলেন ভারতীয় থিয়েটার এবং হিন্দি সিনেমা শিল্পের অগ্রদূত। তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রের নির্বাক যুগে অভিনয়ের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। এছাড়াও তিনি ভারতীয় গণনাট্য সংঘের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ১৯৪৪ সালে মুম্বাই অঞ্চলের চলমান থিয়েটার কোম্পানি পৃথ্বী থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রের কাপুর পরিবারের পিতৃব্য ছিলেন, যেই পরিবারটি চার প্রজন্ম যাবত হিন্দি চলচ্চিত্র শিল্পের অভিনয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ভারতীয় সরকার ভারতীয় চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য তাকে ১৯৬৯ সালে পদ্মভূষণ এবং ১৯৭১ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার প্রদান করেন।

সিনেমার জগতে তাঁর হাতে খড়ি ‘দো ধারি তলোয়ার’ ছবির মাধ্যমে। যদিও এই সিনেমায় তিনি পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। অভিনেতা হিসেবে পর্দায় প্রথম আত্মপ্রকাশ করেছিলেন তাঁর তৃতীয় ছবিতে, নাম সিনেমা গার্লগার্ল (১৯২৯)।

কাপুর পরিবারের চলচ্চিত্র জগতের একচেটিয়া আধিপত্যের সূত্রপাতটা ঘটিয়ে ছিলেন তিনিই। মোটের ওপর নয়টি নির্বাক ছবিতে অভিনয় করার পর ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছিলেন অভিনেতা। ভারতেবর্ষের প্রথম সবাক ছবি আলম আরা-তে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। তারপরই শুরু হয়েছিল বলিউডের কালজয়ী অধ্যায়। অভিনয়ের মূলই হল থিয়েটর, তিনি এই মন্ত্রেই ব্রত ছিলেন। ১৯৪৬ সালে তৈরি করেছিলেন পৃথ্বী থিয়েটার। যার ৫০তম বর্ষপূর্তীর উপলক্ষ্যে ভারত সরকার ১৯৯৬ সালে স্যাম্পও তৈরি করেছিলেন থিয়েটর সংস্থার নামে। এই থিয়েটারের জনপ্রিয়তা ছিল দেশ জুড়ে। থিয়েটর শুরু কিছু বছরের মধ্যেই তাঁর বড় সন্তান রাজ কাপুর চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করে। এরপর থেকেই বলিউডে চিত্রটা যায় পাল্টে।

পৃথ্বীরাজ কাপুর অভিনীত ‘মোগল ই আজাম’ ছবির স্মৃতি আজও সকলের মনে তরতাজা। অভিনয় জীবনে বিস্তর সাফল্যের জন্য তিনি পেয়েছিলেন দাদা সাহেব ফালকে এবং পদ্মভূষণ পুরষ্কারও।

অবসর গ্রহণের পর, পৃথ্বীরাজ পৃথ্বী ঝোপরা নামের একটি কুটির তৈরি করেন, সেটি জুহু সৈকতের কাছাকাছি ছিল। সম্পত্তিটি ছিলো লিজ নেয়া, যেটি শশি কাপুর কিনেছিলেন, এবং পরে একটি ছোট, পরীক্ষামূলক পৃথ্বী থিয়েটারে রূপান্তরিত হয়েছিল। পৃথ্বীরাজ এবং রামসরণি উভয়েরই ক্যান্সার হয়েছিল এবং দুজনই এক পক্ষকালের মধ্যে মারা গেছিলেন, পৃথ্বীরাজ ২৯ মে ১৯৭২ মারা যান এবং ১৪ জুন তার স্ত্রী তাকে অনুসরণ করেন।

পৃথ্বীরাজের জ্যেষ্ঠ পুত্র হলেন রাজ কাপুর, দ্বিতীয় পুত্র শাম্মী কাপুর এবং কনিষ্ঠ পুত্র হলেন শশী কাপুর। কাপুর পরিবার একটি বিশিষ্ট ভারতীয় পরিবার; যারা দীর্ঘ সময় ধরে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অভিনয়, প্রযোজনা এবং পরিচালনা করে আসছেন। এ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা হলেনঃ-রণধীর কাপুর, ঋষি কাপুর, রাজীব কাপুর, করণ কাপুর, কুনাল কাপুর,সানজানা কাপুর,কারিশমা কাপুর,কারিনা কাপুর ও রণবীর কাপুর।

(উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে)

Comment here