সম্পাদকীয়

চারদিকে মৃত্যুর গর্জন ! বাতাসে ভাসবে লাশের গন্ধঃ শেষ বিদায় যেন বেদনাবিধুর না হয় !!

সম্পাদকীয়ঃ
পুরো বিশ্ব এখন কঠোর শাস্বনে শাসিত করছে। করোনা নামক এক অদৃশ্য ভাইরাস, যার কঠিন ছোবলে, মানুষ এখন আতংকে জড়জড়িত। মানুষ চাইলেই পাচ্ছেনা আত্মমুক্তি।চারদিকে হাহাকার পরিস্থিতি বিরাজ করছে,স্থব্দ হচ্ছে চারিদিকের কর্মময় পরিস্থিতি। এমন পরিস্থিতির মাঝখানেও কিছু মানুষ কোন কিছু আমলে নিচ্ছেন না। তাদের কাছে তার পরিবারের চাহিদাটাই সবচেয়ে বেশি গুরত্ব। দৈনন্দিন হাট-বাজারের নামে যে জনসমাগম সৃষ্টি করছে তাতে মনে হয় পরিস্থিতি খুবই ভয়ানক হবে।
এমনই ঘটনা ঘটেছে পিরোজপুর জেলা শহরের প্রধান বাজারে বৃহস্পতিবার সকালে। জেলা ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ লক্ষ্য করছেন-মাছ পট্টিতে ক্রেতারা ভিড় করে গায়ে গায়ে ঘেষে অবাধে কেনাকাটা করছেতো করছেই। সামাজিক দূরত্ব, শারীরিক দূরত্ব ও জনসমাগমের উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও স্বাস্থ্যবিধি এরা তোয়াক্কা করছেন না তারা। পিরোজপুর জেলা প্রশাসন ও জেলা ব্যবসায়ী সমিতি বার বার সতর্ক করলেও আমলে নিচ্ছেন না কতিপয় কান্ডজ্ঞানহীন মানুষ। জেলা ব্যবসায়া সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম মাওলা নকীব তার এফবি আইডতে বাজারের কয়েকটি ছবি দিয়ে এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। করোনার ছোবলে চারদিকে যেখানে মৃত্যুর গর্জন! বাতাসে ভাসছে লাশের গন্ধ সেখানে পিরোজপুর শহরের কতিপয় লোক কেনো এতো নির্বোধ হয় তা আমাদের জানা নেই। তবে আশংকা-তারাতো মরবে আর নিরিহ মানুষদেরকেও মারবে।
তারা কি জানে না>করোনায় আক্রান্ত লাশের কাছে যায় না পিতা, মাতা, স্ত্রী, সন্তান, ভাই, স্বজন, প্রতিবেশী ও সুভাকাঙ্খীরা। জানাযা পরতে ও কবর খোদ তে আসেনা কেউ? তারা বিদায়ী মূহুর্তে পায়না মানবতার ছোয়াঁ। বিদায় নিতে হয় তার অমানবিক এক করুন বিদায়ী মূহুর্তে। আত্মীয়,স্বজন,কিংবা যার যার ধর্ম অনুসারে কেউ আসেনা এই বিদায়ীক্ষনণ তাকে শেষ শ্রদ্ধা কিংবা তার আত্মার শেষকার্য করতে। বরণ করে নিতে হয় কোন জন্তু জানোয়ারের মত তার শেষ বিদায়ীক্ষণ। চরম শত্রুর চোখেও এসময় তার অসহায়ত্ব দেখে অশ্রু চলে আসা স্বাভাবিক।

আমরা বলতে চাই, প্রিয়জন হারানোর ব্যথা স্বজনদের কাছে বরাবরই কষ্টের। যেকোনো মৃত্যুই ভীষণভাবে ব্যথিত করে আপন জনের হৃদয়। তবে, সব মৃত্যুর থেকে সম্ভবত অধিক বেশি কষ্টদায়ক করোনায় মৃত্যুবরণকারীর স্বজন, পরিজন, ভাই-বন্ধুদের। কেননা, এই মৃত্যুর পর প্রিয় মানুষটিকে শেষবারের মত ছুঁয়ে দেখতে পারেন কেউ, সে হোকে পিতা, মাতা, সন্তান, কন্যা, ছেলে কিংবা প্রিয়তম স্বামী অথবা স্ত্রী। এমনি কঠিন পরিস্থিতিতে বিশ্বজুরে রয়েছে আতংকের মধ্যে।
সুতরাং ঘরে থাকুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন,জনসমাগম থেকে বিরত থাকুন, বাসা-বাড়িতে থাকুন। পবিত্র রমজান মাসে সবারই কষ্টের কথা ভেবে জেলা ব্যবসায়ী সমিতি নিয়েছে প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তারা আপনার নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রি হাতের কাছে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে। তাই আপনি নিরাপদ থাকুন, শহরবাসিকেও নিরাপদে রাখুন।

Comment here