ইন্দুরকানী

সাঈদীর যুদ্ধাপরাধ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী বাবুল পন্ডিত আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে মানবতাবিরোধী অপরাধে আজীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর যুদ্ধাপরাধ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম সাক্ষী আ. হালিম খলিফা ওরফে বাবুল পন্ডিত (৬২) আর নেই। বৃহস্পতিবার রাত ১২ টার দিকে উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়নের নলবুনিয়া গ্রামে তার নিজ বাড়িতে ষ্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। শুক্রবার সকালে জানাজা শেষে তাকে নলবুনিয়ার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাজা ও দাফনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. এম মতিউর রহমান, ইন্দুরকানী থানার ওসি মো. হাবীবুর রহমানসহ এলাকাবাসী।
সাঈদীর মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ১৪ নম্বর সাক্ষী ছিলেন পেশায় পল্লী চিকিৎসক বাবুল পন্ডিত। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সাক্ষী সুরক্ষা বিশেষ আইনে পুলিশের নিরাপত্তায় ছিলেন। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে আপিলে উচ্চ আদালত সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন।
ইন্দুরকানী থানার ওসি মো. হাবীবুর রহমান জানান, তিনদিন আগে অসুস্থ হলে বাবুল পন্ডিতকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে বুধবার তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান তিনি। তাকে শুক্রবার সকালে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
বাবুলের ভাই সালাম বাহাদুর জানান, গত কয়েক দিন আগে বাবুল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা বলেছেন তার মস্তিকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। সে অবস্থায় হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডে রেখে তার চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। তাকে আসামিদের কক্ষে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, রাষ্ট্রপক্ষের স্বাক্ষী হওয়ায় নিরাপত্তার জন্য তার সঙ্গে নিয়মিত পুলিশ ফোর্স থাকত। তাই তাকে সাধারণ সেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এমনকি পুলিশি নিরাপত্তার কারণে তাকে প্রাইভেট হাসপাতালেও ভর্তি করাতে পারেনি। গত বুধবার তাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। সালাম বাহাদুরের অভিযোগ, বাবুলের সুচিকিৎসার জন্য জরুরি সেবা পেতে রাষ্ট্রের বিভিন্ন মহলে তিনি যোগাযোগ করেও কোনো সুফল পাননি।‘সুচিকিৎসার অভাবে আমার ভাই আব্দুল হালিম বাবুল মারা গিয়েছেন। আমার ভাইয়ের কোনো শত্রু ছিল না। পুলিশ পাহাড়ার কারণে তার সাধারণ জীবন-যাপন ব্যাহত হয়েছে। এমনকি এই নিরাপত্তার কারণে তার উন্নত কোনো চিকিৎসাও করাতে পারি নাই’, বলেন সালাম বাহাদুর।

Comment here