পিরোজপুর সদর

স্বাধীনতা বিরোধী ও প্রতিক্রিয়াশীলরা মিলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে – গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম বলেছেন, স্বাধীনতা বিরোধী ও প্রতিক্রিয়াশীলরা মিলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। আর বঙ্গবন্ধু’র খুনীদেরকে অগণতান্ত্রিক সরকারগুলো বিভিন্ন সময় পুনর্বাসন করেছে। জিয়াউর রহমান নিজে বঙ্গবন্ধুর খুনীদেরকে দেশের বাইরে পুনর্বাসন করেছেন। আত্মস্বীকৃত খুনীদের বিচার না করে তাদেরকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ইনডেমিনিটি অডিন্যান্সকে সংবিধানের অংশে পরিণত করেছেন। এরপর এরশাদ বঙ্গবন্ধুর খুনীদের সরাসরি রাজনীতিতে পুনর্বাসন ও প্রটেকশন দিয়েছেন। সর্বোপরি খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদেরকে বিভিন্ন মিশনে চাকুরী ও পদোন্নতি দিয়েছেন। জিয়াউর রহমান, এরশাদ ও খালেদা জিয়া একইরূপে কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনীদেরকে সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মীদেরকে ধ্বংস করতে সহায়তা করেছেন।
মন্ত্রী আজ শুক্রবার বিকেলে পিরোজপুর গোপালকৃষ্ণ টাউন ক্লাব মাঠ স্বাধীনতা মঞ্চে জেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের সমাবেশে বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে, বাঙালি সত্ত্বাকে, একাত্তরের চেতনাকে ধ্বংস করার জন্য আগস্ট মাসেই বড় অভিযান চালিয়েছে স্বাধীনতা বিরোধী, প্রতিক্রিয়াশীল দেশীয় ও বিদেশী চক্র। এই আগস্ট মাসেই সিরিজ বোমা হামলা করে বিচারপতি, আইনজীবী হত্যা করা হয়। তাই আগস্ট মাস এলেই আমরা আতঙ্কিত হয়ে পরি। ৭৫ এর ১৫ই আগস্টের ঘটনা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ১৯৭১ সালে যারা পরাজিত হয়েছিলো, তারা পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংস ও বর্বরভাবে হত্যা করে। এরপর ৩ নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। তারপরও তারা শঙ্কামুক্ত হতে পারেনি বলে আবার ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট আঘাত হানে জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ গোটা আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার জন্য। ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট ও ৩রা নভেম্বর, ২০০৪ এর ২১শে আগস্ট এর আঘাতকারীরা এবং অন্তত ১৯ বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টাকারীরা একইসূত্রে গাথা। মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা মানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করা, বাঙালিত্বকে হত্যা করা, ৩০ লক্ষ শহিদের প্রত্যাশা ও স্বপ্নকে হত্যা করা। বঙ্গবন্ধুকে ৭৫ সালে নিষ্ঠুর ভাবে খুন করে একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা আমাদের দেশকে পাকিস্তানী ভাবধারায় পরিচালনা করার অপপ্রয়াস চালিয়েছিলো। জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া তাদের শাসন আমলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তথা স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা বিকৃত করার নানা কুটকৌশল চালায়। মুক্তিযুদ্ধের বর্ণাঢ্য ইতিহাস আজ নতুন প্রজম্মকে জানিয়ে তাদের আগামী দিনের নেতৃত্ব দানের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। যারা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়ে ছিল তারাই আজ যাবজ্জীবন দন্ড নিয়ে কেউ পলাতক আবার কেউ দূর্ণীতির মামলায় জেলে রয়েছে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ^াশী তাদেরকে সজাগ তাকতে বলেন যেন আর কখনও খুনিরা কোনদি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। আলোচনা শেষে ১৫ আগষ্ট হত্যাকান্ডে নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনায় মোনাজত করা হয়।
জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি শাহজাহান খান তালুকদারের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামীলীগ সহসভাপতি ও পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান মলেক, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হাকিম হাওলাদার,সরদার মতিউর রহমান, জাহাঙ্গীর হোসেন,জাদিুল ইসলাম টিটু প্রমুখ।

Comment here