ভান্ডারিয়া

ভাণ্ডারিয়ার কঁচা নদী ভাঙনে তিন জেলে পরিবারের বসতিসহ কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন

ভাণ্ডারিয়া প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার কঁচা নদীতে আকস্মিক ভাঙনের কবলে পড়ে তিনটি জেলে পরিবারের কৃসিজমি ও বসতি সম্পূর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আজ বৃহসপতিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে কচাঁ নদী তীরবর্তী নদমূলা জেলে পল্লী এলাকায় হঠাৎ ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনের কবলে পড়ে মূহুর্তেই দুই একর কৃষিজমি ও তিনটি জেলে পরিবারের বসতি সম্পূর্ণ নদীগর্ভে চলে যায়। নদী ভাঙনে তিন জেলে পরিবার বসতি হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে, আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে হঠাৎ কঁচা নদীতে ভাঙন শুরু হয়। প্রথমে জেলে নাসির হাওলাদারের বসতি ভাঙনের কবলে পড়লে ঘরের লোকজন ভয়ে ঘর ছেড়ে বের হয়। এরপর পার্শ্ববর্তী আরও দুই জেলে জামাল হালাদার ও আমির হালাদারের বসতঘর পালাক্রমে ভাঙনের কবলে পড়ে নদী গর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়। এসময় জেলে পল্লীতে আতংক বিরাজ করে। স্থানীয়রা বাসিন্দারা মিলে বিপন্ন জেলেদের বসতঘরের মালামাল স্থানান্তরের চেষ্টা চালিয়ে ব্যার্থ হয়। ভাঙনে বিপন্ন জেলে পরিবারের সদস্যরা রক্ষা পেলেও তাদেও বসতঘর,মালামাল,হাস-মুরগি সম্পূর্ণ নদী গ্রাস করে ফেলে। এছাড়া ভাঙন কবলিত স্থানের আশপাশ জুড়ে প্রায় দুই একর কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। গৃহহীন পরিবার গুলো খোলা আকাশের নীচে চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বিপন্ন এসব পরিবারের রান্না বান্না করার মতোন কোন সামগ্রী আর অবশিষ্ট নেই। ভাঙনে সর্বস্বহারা পরিবারগুলোর জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্দশা।
এদিকে আকাস্মিক নদী ভাঙনের খবর ছড়িয়ে পড়লে নদমূলা জেলে পল্লীর বাসিন্দাদের মাঝে চরম আতংক দেখা দেয়। ভাঙন অব্যহত থাকায় আরও পাঁচটি বসতবাড়ি হুমকীর মুখে রয়েছে।
নদী ভাঙনের খবর পেয়ে ভা-ারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মিরাজুল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল আলম ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।
নদী ভাঙনে গৃহহীন গৃহবধূ ফিরোজা বেগম(৩৫) কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, আল্লা মোরা অহন কই থাকমু। মোগো বাঁচান আল্লা। নদী মোগো সব গেলছে।
গৃহহীন জেলে মো. নাসির উদ্দীন জানান, বুধবার গভীর রাত থেকেই নদমূলা জেলে পল্লীতে মৃদু ভাঙন শুরু হয়। ভোরে ভাঙনের তীব্রতা বাড়তে থাকে। তিনি বলেন, আমাগো ঘরবাড়ি আর সব মালামাল রুহুর্তেই কঁচা নদী গিলে খেল। ভাঙনের মাঝে প্রাণের ভয়ে ঘরের মালামাল রক্ষা করতে পারিনাই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমূল আলম জানান, ভূক্তভোগি জেলে পরিবার গুলো বেরিবাঁধের বাইরে নদী তীর লাগোয়া এলাকায় বসবাস করছিল। সেখানে ভাঙন দেখা দেওয়ায় জেলে পরিবারগুলোকে বাঁধের ভিতর অংশে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ভাণ্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মিরাজুল ইসলাম কঁচা নতীতে আকস্মিক ভাঙনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নদী ভাঙন রোধে কঁচানদীর তীরে ব্লক ফেলে বেড়িবাধ নির্মানের কাজ চলমান। তবে ভাঙন কবলিত এলাকাটি এ কাজের বাহিরে রয়েছে। গৃহহীন জেলে পরিবার গুলোকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, নদী ভাঙনের খবর পেয়ে পাউবোর প্রকল্প পরিচালক এর সাথে কথা বলেছি। বিপন্ন জেলে পরিবার গুলোকে নদী তীর থেকে সরিয়ে এনে বেরিবাঁধের ভিতরে পুনর্বাসন করা হবে।

Comment here