ইতিহাস ও ঐতিহ্য

পিরোজপুরে প্রথম শহীদ মিনারের ইতিকথা

এ কে আজাদঃ
ঢাকার ছাত্র জনতার উপর পুলিশের নির্বচিার গুলি বর্ষণের প্রতিবাদে সার দেশে ছাত্র জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়ল। বিক্ষুব্দ হলো সারা দেশের ন্যায় পিরোজপুরের ছাত্র জনতা। সবার মধ্যে চাপ ক্ষোভ। তখন ১৯৫২ সালের নভেম্বর মাস। পিরোজপুরের তৎকালিন ছাত্র নেতা মহকুমা শহরের হাসপাতাল সড়কের বাসিন্দা মরহুম সোবাহান মোক্তারের মেঝো ছেলে মরহুম শহীদুল্লাহ সহীদ (বর্তমান পৌর কাউন্সিলর সাউদুল্লাহ লিটনের বাবা), কলাখালী গ্রামের মরহুম আঃ খালেক সরদারের বড় ছেলে ও পিরোজপুর শহরের হাসপাতাল সড়কের মরহুম হেমায়েত উদ্দিন মোক্তারের ভাগ্নে মরহুম হালিম সরদার (কলাখালী জিন্নাত আলী মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক), পিরোজপুরের মুক্তারকাঠি গ্রামের মরহুম নুরুল ইসলামের মেঝ ছেলে মরহুম জহুরুল হক রফু (বিমান বাহিনীর সার্জেন্ট), শহরের হাসপাতাল সড়কের মরহুম হাকিম সরদারের সেজো ছেলে মরহুম আব্দুর রহিম খোকন ( জেলা ছাত্বরলীগের সাবকে সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সিঙ্গারের ম্যানেজার রাসেল পারভেজ এর বাবা) প্রমুখরা পিরোজপুরে একটি শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ জন্য তারা চাঁদা সংগ্রহ শুরু করেন এবং সিদ্ধান্ত নেন যেকোন মূল্যে ১৯৫৩ সালের ২১ ফেব্রæয়ারীর আগেই। শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে।
এ ব্যাপারে তারা মরহুম আফতাব উদ্দিন আহম্মেদ, মরহুম আব্দুল আজিজ মল্লিক, মরহুম জয়নূল আবেদীন (প্রাক্তন এমপি ও পিরোজপুর প্রেসক্লাবরে সভাপতি মুনিরুজ্জামান নাসিমের বাবা), তাঁদের সাথে সাথে যোগাযোগ করেন।
অবশেষে পিরোজপুর এবং শ্রীরামকাঠি থেকে মোট ১,১৩৫ টাকা চাঁদা সংগ্রহ করে শহরের রিজার্ভ পুকুরের পূর্ব-উত্তর কোনে (যেখানে একটি শহীদ মিনার এখনো আছে) নির্মিত হয় শহীদ মিনার। এই শহীদ মিনারেই পালিত হয় ১৯৫৩ সালের প্রথম শহীদ দিবস। ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময় এ শহীদ মিনারেই পালিত হয়েছে শহীদ দিবস।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হলে বর্বর পাক হানাদাররা শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে ফেলে। ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর পিরোজপুর শত্রুমুক্ত হয়। এরপর নতুন করে আবার শহীদ মিনার নির্মাণের উদোগ নেয়া হলো। একই স্থানে পৌরসভার উদ্যোগে নিমর্তি হয় শহীদ মিনার। যেটি আজও পূরানো শহীদ মিনার হিসাবে পরিচিত।
পূরানো শহীদ মিনারে পিরোজপুর জেলা উদীচীর পক্ষে সম্পাদক খালিদ আবু এবারও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

Comment here