কভিড-১৯ (করোনা)

পিরোজপুরে করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছেঃ উপসের্গে মুত্যু ৬ঃ আক্রান্ত ৭৪ঃ জনমেনে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পিরোজপুরে করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। গত দুইদিনের ব্যবধানে শহরের দু’ব্যবসায়ীর মৃত্যু সহ করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান ৬জন। এরমধ্যে পিরোজপুরে সদরে ৩জন, ইন্দুরকানীতে ১ এবং ভান্ডারিয়ায় ২জন। বর্তমানে জেলায় মোট কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭৪জন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, পিরোজপুর জেলায় বর্তমানে সদর উপজেলায় ২৩ জন, ভান্ডারিয়া উপজেলায় ১২জন, মঠবাড়িয়া উপজেলায় ১৪জন, স্বরূপকাঠি (নেছারাবাদ) উপজেলায় ৬জন, কাউখালী উপজেলায় ১জন, ইন্দুরকানী উপজেলায় ১১জন এবং নাজিরপুরে ৭জন করোনা সনাক্ত রোগী রয়েছে।
সূত্রে জানাযায়, পিরোজপুর জেলায় গত দুই সপ্তাহের মধ্যেই আক্রান্তের হার বেড়ে যায়। রোববার দুপুরে জেলা হাসপাতালের আইসোলেশনে ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাজারের একজন চাল ব্যবসায়ী। পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের আরএমও ডা. নিজাম উদ্দিন জানান, রোববার ১২ টার দিকে দিকে জ্বর,শ্বাস কষ্টো নিয়ে চিকিৎসার নেয়ার জন্য হাসপাতালে আসে ওই রোগী। পরে তার কোভিড-১৯ উপসর্গ আছে বিধায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কে আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করে। সেখানেই চিকিৎসাধীণ অবস্থায় দুপুরে ১ টার দিকে দিকে মারা যান ওই ব্যবসায়ী। এর আগে শুক্রবার জেলা হাসপাতালের আইসোলেশনে ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অপর এক ব্যবসায়ী।
এদিকে পিরোজপুর শহরের এক ব্যাংক কর্মকর্তার ও তার স্ত্রী এবং পালপাড়া এলাকায় করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে।
অপরদিকে নেছারাবাদ উপজেলার স্বরূপকাঠি ইউনিয়নে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শহিদ হোসেন(৫০)। শুক্রবার (২৯ মে) দুপুরে নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: ফিরোজ কিবরিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় প্রশাসন ওই ইউপি সদস্যের বাড়ী লকডাউন ঘোষনা করেছেন।
করোনা আক্রান্ত ইউপি সদস মোবাইল ফোনে জানান, তিনি ঠান্ডা সমস্যাসহ দীর্ঘদিন থেকে ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন। গত ১৮ মে তিনি ঢাকা থেকে বাড়ীতে আসার পর ঠান্ডা সমস্যা অনুভাব করেন। বিষয়টি জানার পর হাসপাতাল থেকে এসে তার শরীরের নমুনা নিয়ে যায়। ওই সময় থেকেই তিনি সেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন।
এসময় তিনি বলেন, বর্তমানে তার শরীর সম্পূর্ন সুস্থ রয়েছে। শরীরে যদি করোনা থাকে তাহলে এত দিনে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়তেন। তাই তিনি তার শরীরের পূনরায় নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করার জন্য দাবী করেন।
এ বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: ফিরোজ কিবরিয়া জানান, তিনি সম্প্রতি ঢাকা থেকে বাড়ীতে আসেন। গত ২৫ মে হাসপাতাল থেকে ওই ইউপি সদস্যর বাড়ীতে গিয়ে শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে বরিশালে পাঠানো হয়। শুক্রবার দুপুরে বরিশাল থেকে জানানো হয় তার শরীরে করোনা পজিটিভ।
এসব কারণে পিরোজপুরে করোনা সংক্রামন পরিস্থিতি নিয়ে জনমেনে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে।
সচেতন মহলের অভিমত, জেলার বাইরে থেকে আসা লোকজন এবং তাদের দ্বারা সংক্রমিত হয়েছে বেশি। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে অনেক করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, করোনা হলেই মৃত্যু নয়, উপসর্গ দেখো দিলেই প্রথমে বাড়িতে থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নেয়া উচিত। অবস্থার অবনতি হলে আসপাতালে আসতে হবে।

Comment here