নাজিরপুর

নাজিরপুরে কলেজ ছাত্রীকে আটক রেখে যৌন হয়রানী, বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণঃ ৩জনকে আসামী করে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পিরোজপুরের নাজিরপুরে দ্বাদশ শ্রেণির এক কলেজছাত্রী ও দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রকে দিনভর আটক রেখে মারধর ও চাঁদাদাবীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। দাবীকৃত চাঁদা না দেয়ায় ওই কলেজ ছাত্রীকে যৌন হয়রানীসহ উভয়কে বিবস্ত্র করে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেছে স্থানীয় কতিপয় বখাটে।
তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা আহত ওই ছাত্র-ছাত্রীকে উদ্ধার করে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এ সময় হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক তাদের ভর্তির উদ্যোগ নেয়। এ সময় স্থানীয় সরকারি দল সমর্থিত এক জনপ্রতিনিধি আহতদের হাসপাতাল থেকে তার বাসায় নিয়ে বিষয়টি মিমাংসার নামে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে।
এ সংবাদ পেয়ে নাজিরপুর থানা পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির ব্যবস্থা করেছে। এ ঘটনায় বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ ঘটনার মুল আসামী মনিরকে আটক করেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই কলেজছাত্রী জানান, বুধবার সকালে ওই ছাত্রী নাজিরপুর উপজেলা সদরে প্রাইভেট পড়া শেষে তার প্রতিবেশী ছোটভাই দশম শ্রেণির ছাত্র সজিবকে সাথে নিয়ে উপজেলার শাখারীকাঠী ইউনিয়নের হোগলাবুনিয়া গ্রামে দাদার বাড়ীতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। সকাল ৯ টার দিকে ওই ইউনিয়নের গোপেরখাল নামক এলাকায় পৌছলে স্থানীয় মনির, অভিজিৎ, শফিক মল্লিক ও শুভ তাদের পথরোধ করে জোরপূর্বক পার্শ্ববর্তী একটি কলা বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে তারা তাদের দুজনের মধ্যে কি সর্ম্পক জানতে চায়। তখন ওই ছাত্রী সজিব তার প্রতিবেশী ছোট ভাই বলে জানালে তারা তাদের দুজনকে মারধর করে এবং ওই তাদের মধ্যে অবৈধ সর্ম্পক আছে এ কথা বলতে বাধ্য করার চেষ্টা করে। তাতে রাজি না হওয়ায় তাদের দুজনকেই মারধর করে। ওই বখাটেরা তাদের দু’জনকে দিনভর সেখানে আটক রাখার পর তাদের অভিভাবকদেও ফোন করে এক লাখ টাকা চাঁদা আনতে বলে। এতে রাজী না হওয়ায় তাদেরকে পুনরায় মারধর করে। এক পর্যায়ে জোর পূর্বক ওই দুই ছাত্র-ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করে। এ সময় স্থানীয়রা চিৎকার শুনে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সন্ধ্যার দিকে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এ সময় হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক তাদের ভর্তির উদ্যোগ নিলে স্থানীয় ওই জনপ্রতিনিধি আহতদের হাসপাতাল থেকে তার বাসায় নিয়ে বিষয়টি মিমাংসার নামে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। এ সংবাদ পেয়ে নাজিরপুর থানা পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির ব্যবস্থা করেছে। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত আহত ওই ছাত্র-ছাত্রী নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম মুনির জানান, এ ঘটনায় জড়িত মুল আসামী মনিরকে ইতোমধ্যে আটক করা হয়েছে এবং ৩জনকে আসামী করে মামলা রুজু হয়েছে।

Comment here