রাজনীতি

একজন নারী রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে কত রকমের সংগ্রাম পাড়ি দিতে হয় তা একজন নারী নেত্রীই জানেন

এ কে আজাদঃ
একজন নারী রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে কত রকমের সংগ্রাম পাড়ি দিতে হয় তা একজন নারী নেত্রী জানেন। প্রথমে নিজ ঘর থেকে, তারপর সমাজ থেকে, তারপর সহ যোদ্ধা পুরুষ পর্যন্ত। সবাই নারী নেতৃত্বেকে সহজে মেনে নিতে পারেন না। যদি পারতেন তাহলে খোদ আমেরিকায় হিলারি ক্লিটন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হতেন।
আমাদের দেশে একজন নারীকে ঘুরে দাঁড়াতে হয় শক্ত মাটিতে আরো দশগুণ শক্ত হয়ে। কারণ নারী রাজনীতি করতে গেলে বাধা, চাকরি করতে গেলে বাধা, দশজন পুরুষের মতো কাজ করতে গেলে বাধা। এই বাধাগুলো অতিক্রম করতে গেলে সে হয়ে যায় কলঙ্কিনী। তথাকথিত সমাজের কলঙ্কিনী যখন জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দেন, জেলা-উপজেলায় নেতৃত্ব দেন, তখন নারী জাগরণের কথা চিন্তা করে হয়তোবা কিছুটা হলেও মেনে নিতে হয়। কারণ নারীরাও এখন সব পারে। তবে একজন নারী সৎ চিন্তা করে রাজনীতিতে আসলেও অনেক ক্ষেত্রে কতিপয় দুঃচরিত্র প্রকৃতির রাজনিতিক দ্বারা যৌন হয়রানরি শিকার হন। আর সেই নারী উপরে ওঠার জন্য এসব নিরবে সহ্য করেন। নেতা বা নেত্রী হবার জন্য বুকফাটা যন্ত্রনা ও কষ্ট নিয়ে তাকে বেঁচে থাকতে হয়।
একজন নারী তার যোগ্যতায় বর্তমানে সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠিত, এটা কোন দোষের নয়। বরং সাধুবাদ জানানো উচিত নারী সমাজকে। তবে অতি লোভী, অতি স্বাধীনতা, আধুনিকতার নামে বেলাল্লাপনা নারী উন্নয়নে বড় অন্তরায়।
সরকার এবং প্রশাসনের উচিত এসব কাজে যারা লিপ্ত তাদের প্রথমে কঠোরভাবে সতর্ক করে দেয়া।
আইনে প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, আজ পাপিয়াকে গ্রেফতার করে জনসমুক্ষে তার কৃতিকলাপ প্রকাশ করা গোটা নারী সমাজকে হেয় করার সামিল। আর একশ্রেণির লোক এটাকে বিনোদন হিসেব লুফে নিচ্ছে। জেনেছি শুধু রাজধানীতেই ১৫৩ জন পাপিয়া রয়েছেন। বিষয়টি খুবই দঃখজনক। বলাবাহুল অতীতের আন্দলোন সংগ্রামেতো পাপিয়া-ডলিদের অনেক অবদান রয়েছে। কিন্তু ক্ষমতার আসার পর এদেরকে তেমন পুনর্বাসন করা হয়নি। ফলে তারা অর্থ উপার্জনে বেপোয়ারা হয়ে উঠেন। অনুপ্রেরণা পেয়েছেন কতিপয় লম্পট জাতীয় রাজনিতিকদের।
সুতারং একজন নারীকে নারী হিসেবে না দেখে একজন মানুষ হিসেবে দেখে তাকে সৎভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ করে দিতে হবে। পরিত্যাগ করতে হবে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। নারী সহযোদ্ধাদের প্রতি কতিপয় পুরুষ রাজনিতিকদের লোলুপ বাসনার পরিবর্তে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন আরো সুপ্রতিষ্ঠিক করার সুযোগ করে দিতে হবে। তাহলে অনেকাংশে কমে যাবে পাপিয়াদের সংখ্যা। পাশাপশি পাপিয়াদেরকেও সংশোধন হয়ে অতি লোভ, অতি লালসা পরিহার করে একজন আদর্শ নেতা-নেত্রী হিসেবে রানৈতিক অঙ্গনে বিচরণ করতে হবে।

Comment here