ভান্ডারিয়া

ভাণ্ডারিয়া রোহিঙ্গাকে নাগরিক সনাক্তকারী কাউন্সিলর কারাগারে

ভাণ্ডারিয়া প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় মায়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক জামালকে ভাণ্ডারিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের স্থায়ী নাগরিক হিসাবে সনাক্তকারী নারী কাউন্সিলর বেবী আক্তারকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
সোমবারা পিরোজপুরে জেষ্ঠ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানালে আদালতের বিচারক মোঃ মহিউদ্দিন তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আকন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নারী কাউন্সিলর বেবী আক্তার রোহিঙ্গা নাগরিক জামালকে ভাণ্ডারিয়া পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের নাগরিক বলে প্রথম সনাক্ত করেন।
মামলার বাদী পিরোজপুর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন জসিম জানান, রোহিঙ্গা জামাল তার অপর দুইভাই আবু তৈয়ব (১৩), আবু হায়াত (১০) এবং তিন বোন রুখাইয়া (২২), জামালিডা (১৬) এবং সোমা (৮)কে নিয়ে ২০১৭ সালের ২৮সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসে । এরপর তারা কক্সবাজার জেলার বালুখালী আশ্রয়ন ক্যাম্পে ছিলেন । রোহিঙ্গা জামালের পিতার নাম -আমির হোসেন মাতা-বেলুয়া বেগম, রাম্যখালী, থানা ডেমিনা জেলা- রাখাইন। রোহিঙ্গা জামালের রিফিউজি নাম্বার-১৩২২০১৮০১২০১৪৫৮৫২ ।
একমাস আগে রোহিঙ্গা জামাল কক্সবাজার জেলার বালুখালী আশ্রয়ন ক্যাম্প থেকে পালিয়ে ভাণ্ডারিয়ায় আসে। এরপর রোহিঙ্গা নাগরিক জামালকে শাহিনুর বেগম তার ভাণ্ডারিয়া বন্দরের বাসায় আশ্রয় দেয়। রোহিঙ্গা জামালকে তাদের সন্তান পরিচয়ে ভাণ্ডারিয়া পৌরসভার ডিজিটাল সেন্টার থেকে জন্ম নিবন্ধন করে জন্ম সনদ সংগ্রহ করে এবং জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরীর প্রায় সকল কাজ সম্পন্ন করে। এরপর রোহিঙ্গা জামালকে ভাণ্ডারিয়া বাজারে ওই দম্পতির জিহাদ গ্যালারী নামের কাপড়ে দোকানে কাজ দেয়।
জামাল বিদেশ যাওয়ার জন্য সে নিজের পরিচয় গোপন করে পিতার নাম মো. মিজান সিকদার ও মাতার নাম শাহীনুর বেগম লিখে ভূয়া জাতীয় পরিচয়পত্র যার নম্বর-১৯৯৭৭৯১১৪১১০০০৫১০ সংগ্রহ করে। এতে জন্ম তারিখ জন্ম তারিখ.১০ জুলাই ১৯৯৭ উল্লেখ করা হয়। জাতীয় পত্র তৈরীতে বয়স প্রমানের জন্য ভাণ্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা.বেলাল হোসেন তাকে সার্টিফিকেট দেন। এরপর জামাল রাজাপুর উপজেলার কানুদাসকাঠী-নলবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০৯ সনের অষ্টম শ্রেণী পাসের সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে। এ সময় ভান্ডারিয়া পৌরসভা থেকে নাগরিক সনদপত্র সংগ্রহ করে। এ সনদপত্রের জন্য আবেদনে নারী কাউন্সিলর বেবী আক্তার জামালকে ভান্ডারিয় া পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের নাগরিক বলে প্রথম সনাক্ত করেন।
গেল ১৬ফেব্রুয়ারী রোববার দুপুরে রোহিঙ্গা জামাল ভাণ্ডারিয়ার ঠিকানা ব্যবহার করে পিরোজপুরের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আবেদনপত্র জমা দেন।আঙ্গুলের ছাপ দিতে গেলে জানাযায় জামাল মিয়ানমারের নাগরিক । পিরোজপুর গোয়েন্দা পুলিশের উপ পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন জসিম জানান, ১৮ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার ভাণ্ডারিয় থেকে জামালের আশ্রয়দানকারী মা শাহিনুর বেগমকে আটককরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পিরোজপুর পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মো.আবুল হোসেন জানান, রোহিঙ্গা জামালের আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের তথ্য বেড়িয়ে আসে।

Comment here