ব্রেকিং নিউজ

আমৃত্যু দণ্ডিত পলাতক যুদ্ধাপরাধী মঠবাড়িয়ার আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ার মারা গেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পিরোজপুর-৩ মঠবাড়িয়া আসনের জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির নেতা ৭১’র যুদ্ধাপরাধের দায়ে আমৃত্যু দণ্ডিত পলাতক যুদ্ধাপরাধী আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ার (৯০) মারা গেছেন। তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন কিনা জানতে চাইলে সূত্র এ বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।
মঙ্গলবার ভোরে আমেরিকার ফ্লোরিডায় তার মেয়ের বাসায় চিকিৎসাধিন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুর বিষয়টি তার পারিবারিক সূত্র স্থানীয় সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।যুদ্ধাপরাধী জব্বার ইঞ্জিনিয়ার করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন কিনা জানতে চাইলে সূত্র এ বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত অবস্থায় আমেরিকায় তার বড় মেয়ের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন।
১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধের সময় আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ার মঠবাড়িয়ায় পিস কমিটির চেয়ারম্যান হয়ে বিশাল এক রাজাকাকার বাহিনী গড়ে তোলেন। ৩৬জন মুক্তিকামী মানুষের ওপর গণহত্যা, ৫৫৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ২শ’জনকে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করাসহ ৫টি গুরুতর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এছাড়াও তিনি সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম ঘোষিত ৫০ যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় তার নাম রয়েছে।
২০১৪ সালের যুদ্ধাপরাধের মামলায় তিনি আমৃত্যু দণ্ডিত হন। এছাড়া ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তার নির্দেশে রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার ইসকান্দার মৃধার নেতৃত্বে একদল রাজাকার বাহিনী দু’টি গণহত্যাসহ ৮ মেধাবী ছাত্র হত্যা, হিন্দু বাড়ীতে লুটপাট, নারী নির্যাতন ও অগ্নি সংযোগ করে।
২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর উপজেলার টিকিকটা ইউনিয়নের সূর্যমণি গ্রামের ২৪ হিন্দু বাঙালীকে গণহত্যার গুলি খেয়ে বেঁচে যাওয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত জ্ঞানেন্দ্র মিত্র (৬২) বাদী হয়ে মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছিলেন। মামলায় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ারকে প্রধান আসামি করে সাত জনকে আসামি করা হয়।
এছাড়া মামলায় আরও ৬০/৬৫ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামি করা হয়। ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুানালে মামলা স্থানান্তরিত হয়। পরে তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধি পাঁচ ধরনের অভিযোগে ২০১৪ সালের ১ মে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন। ওই বছর ১২ মে জব্বারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। তবে এর আগে ২০১০ সালে তিনি গোপনে দেশ ছেড়ে পালিয়ে আমেরিকায় আত্মগোপন করেন। ২০১৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এনায়েতুর রহীম এর নেতৃত্বাধিন গঠিত ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদালতে পলাতক যুদ্ধাপরাধি আব্দুল জব্বারের আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

Comment here