প্রকৃতির অফুরন্ত দান ও বাংলার ঐতিহ্যের এক অনন্য প্রকাশ—এই ভাবনাকে সামনে রেখে পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পিবিপ্রবি) প্রথমবারের মতো আয়োজিত হলো মৌসুমী ফল উৎসব-২০২৫।
বুধবার (২ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন চত্বরে আয়োজিত দিনব্যাপী এই উৎসব দেশি ফলের সুবাস ও স্বাদে মুখর করে তোলে পুরো প্রাঙ্গণ।
সকাল ১১টায় ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন,
“ফল উৎসব শুধুই একটি আয়োজন নয়, এটি আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং নতুন প্রজন্মকে দেশের ঐশ্বর্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার একটি প্রয়াস।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ প্রকৃতির এক অপার সম্ভাবনার দেশ। এখানে উৎপন্ন শত শত প্রজাতির দেশি ফল আমাদের শরীরের জন্য যেমন উপকারী, তেমনি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। এসব ফল আমাদের নতুন প্রজন্মের চেনা প্রয়োজন।”
উৎসবে আম, কাঁঠাল, আনারস, পেয়ারা, আমড়া, পেঁপে, কলা, সফেদা, লটকন, ড্রাগন ফল, করমচা, কামরাঙ্গা, কাউফল, ডেউয়া সহ নানা স্বাদের ও রঙের দেশি ফলের বাহার ছিল চোখে পড়ার মতো। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংবাদিকসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার এবং স্থানীয় জনগণ উৎসবস্থলে ভিড় করেন। শুধু স্বাদ গ্রহণই নয়, অনেকেই এসব ফলের পুষ্টিগুণ ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব নিয়েও আগ্রহ দেখান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আকতার হোসেন এবং পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম রেজাউল ইসলাম শামীম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। তারা এ ধরনের আয়োজনকে শিক্ষাবান্ধব ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করে নিয়মিত আয়োজনের প্রত্যাশা জানান।
উপাচার্য তার বক্তব্যে সবাইকে পরিবেশ রক্ষায় গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন,
“খালি জায়গা খালি রাখবেন না, এক টুকরো মাটিও বৃক্ষের অধিকার থেকে বঞ্চিত হোক না। দেশি ফল বেশি খান, বিদেশি ফলের মোড়কে না ভুলে যাই নিজের শিকড়কে।”
প্রাণবন্ত পরিবেশ, দেশীয় সংস্কৃতির আবহ ও প্রকৃতির সান্নিধ্যে এই উৎসব পিবিপ্রবি ক্যাম্পাসকে করে তোলে একদিনের জন্য যেন একটুকরো গ্রামবাংলার খোলা উঠোন।
সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে উৎসবটি হয়ে ওঠে উদ্ভাবনী ও মানবিক চেতনার এক অনন্য মিলনমেলা।


Comment here