ব্রেকিং নিউজ

সাবেক এমপি আউয়াল ও তার স্ত্রীর সম্পদ জব্দের আদেশ বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম এ আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা ইরাদের জব্দ সম্পদ (ব্যাংক একাউন্ট) খুলে দেয়ার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি রাশেদ জাহাঙ্গীরের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের দুই মামলার পরিপেক্ষিতে এ বছরের ১৭ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক এমপি একেএম আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি ও ব্যাংক হিসাব ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই আদেশ আজ সোমবার হাইকোর্ট বলবৎ রাখলো।
উল্লেখ্য দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী আকবর গত ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ৩টি ও ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টম্বর আরও ২টি এ কে এম এ আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা ইরাদের পৃথক পৃথক মোট ৫ পাঁচটি মামলা দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ে দায়ের দায়ের করেন।

এতে সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম এ আউয়ালের নামে অবৈধ উপায়ে অর্জিত জ্ঞাত আয় বহিঃর্ভূত ৩৩ কোটি ২৭ লাখ ৮৯ হাজার ৭৫৫ টাকা মূল্যে সম্পদের মালিকানা অর্জিত হয়। এ ছাড়া তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে মোট ১৫ কোটি ৭২ লাখ ৪ হাজার আটশত ৪৩ টাকার সম্পদ গোপন করার প্রমাণ পাওয়া যায়। এর প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২), ২৭ (১) ও মানি লন্ডারিং ২০১২ এর ৪ (২) -এ দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপর দিকে তার স্ত্রী লায়লা পারভীন ১০ কোটি ৯৮ লাখ ৯০ হাজার ৫০ টাকা জ্ঞাত আয় বহিঃর্ভূত সম্পদ অর্জন করায় দুর্নীতি দমন আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২), ৪ (৩) -এ অপর একটি মামলা দায়ের করা হয়।

দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী আকবর বলেন, সাবেক এম পি আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের সম্পদ অনুসন্ধান করে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে গত ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ওই মামলা দুটি দায়ের করা হয়। এর আগে গত ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী আকবর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় বরিশালে ৩টি মামলা দায়ের করেন। তিনটি মধ্যে দুইটি সাবেক এমপি আউয়াল এবং একটিতে তার স্ত্রী লায়লা পারভীনকেও আসামি করা হয়।


ওই মামলা সূত্রে জানা যায়, জেলার নাজিরপুর থানার সামনে ও উপজেলা সদরের ভূমি অফিসের পেছনের ১৩ শতাংশ সরকারি খাস জমি নিজের দখলে নেন। পরে সেখানে তিনি দ্বিতল পাকা ভবন নির্মাণ করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে অফিস হিসেবে ভাড়া দেন। এতে চুক্তি করেন এমপির স্ত্রী লায়লা পারভীন। তিন মামলায় গত ২০২০ সালের ০৭ জানুয়ারি তারা হাজির হয়ে জামিন আবেদনের পর ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে ৩ মার্চ তারা পিরোজপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ওইদিন শুনানি শেষে জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুল মান্নান জামিন না মঞ্জুর কারে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরবর্তীতে তাদের ডিভিশন দিতে আবেদন করেন আইনজীবীরা। আদালত সেটি মঞ্জুর করেন। এর মধ্যে জেলা জজকে বদলি করা হয়। বিকালে ফের জামিন আবেদনের পর বিচারক নাহিদ নাসরিন তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর গত ২১ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের জামিনের মেয়াদ আরও এক মাস বাড়ে।

এই সকল মামলার খাসজমি দখলের অভিযোগে পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা আউয়ালের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঢাকার প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আলী আকবর ২০১৯ সালের করা মামলার তদন্ত শেষে দন্ডবিধির ৪২০,৪০৯ ও ধারায় অভিযোগ এনে এ বছরের (২০২১) ২৫ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে চার্জশিট জমা দেন।

এ কে এম এ আউয়াল ২০০৮ ও ২০১৪ সালে পর পর দুইবার পিরোজপুর-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।

Comment here