মঠবাড়িয়া

ডাকাতিকালে চিনে ফেলায় মঠবাড়িয়ার একই পরিবারের ৩জন খুন

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় অটোরিকশা চালক আয়নাল হক (৩৫), তার স্ত্রী খুকু মনি (২৫) ও তাদের তিন বছরের শিশু কন্যা আশফিয়ার হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের যৌথ অভিযানে শনিবার ভোরে প্রধান আসামি অলি বিশ্বাস (৩৮) ও রাকিবকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, আয়নাল তার ঘরে ডাকাতিকালে অলিকে চিনে ফেলায় একে একে তাকে, তার স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। গ্রেপ্তার অলি উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের মৃত্য তুজাম্বর আলীর বিশ্বাসের ছেলে ও রাকিব একই গ্রামের কাওসার বেপারীর ছেলে।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আ জ মো. মাসুদুজ্জামান মিলু জানান, শনিবার দুপুরে গ্রেপ্তার অলি ও রাকিবের দেওয়া তথ্যমতে, এ ডাকাতি ও ট্রিপল মার্ডারে ব্যবহৃত দেশিয় অস্ত্র ও ডাকাতির টাকা উদ্ধার করা হয়।

জেলা পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান শনিবার সন্ধ্যায় মঠবাড়িয়া থানা চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন,’মুখোশধারী চার জন ঘাতক ডাকাতির জন্য সিঁদ কেটে আয়নালের বসত ঘরে প্রবেশ করে। ঘরে ঢুকে আয়নালকে মারধর করে নগদ টাকা ও বিভিন্ন মালামাল লুট করে। এ সময় অলিকে চিনে ফেলে আয়নাল অনুনয় বিনয় করে বলে, ‘অলি তুই মোরে মারিস না, টাহা-পয়সা যা আছে লইয়া যা।’ ঘাতকদের চিনে ফেলাই কাল হয়েছে আয়নালের। এরপর চার ঘাতক মিলে আয়নাল ও তার স্ত্রী খুকুকে হাত বেঁধে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ বসত ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। এ সময় আয়নালের ৩ বছরের মেয়ে আশফিয়া কান্নাকাটি করলে ঘাতকরা তাকেও গলা টিপে হত্যা করে লাশ আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে।’

পুলিশ সুপার জানান, গত ৮ জুলাই আয়নাল স্থানীয় সাফা বন্দর কৃষি ব্যাংক থেকে ২০ হাজার টাকা উত্তোলন করে বাড়ি ফেরার পথে ঘাতক অলি দেখে ফেলে। এছাড়া অলি জানতে পারে যে, আয়নালের স্ত্রী খুকু প্রতিবেশীর ঘরে রাখা কিছু স্বর্ণালংকার সম্প্রতি ঘরে নিয়ে এসেছে। ওই টাকা ও স্বর্ণ ডাকাতি করার জন্য গত ৩০ জুলাই গভীর রাতে আয়নালের ভাড়া ঘরে অলি ও রাকিবসহ চার জন সিঁদ কেটে প্রবেশ করে।
গত শুক্রবার (৩১ জুলাই) সকালে মঠবাড়িয়া উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের একটি বসত ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় অটোচালক আয়নাল, তার স্ত্রী খুকু মনি ও মেয়ে আশফিয়ার লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এরপর চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে একই গ্রামের মালেক (৫৫), শামিম গাজী (২৬), রহিম (১৯), মাহাবুব (২০), সাকিল (১৯), শাহিনকে (১৯) গ্রেফতার করা হয়।

Comment here