অমানবিক!ইন্দুরকানী

ইন্দুরকানীতে সচ্ছল সন্তানের ঘরে জায়গা হয়নি অচল বৃদ্ধ মায়ের

আহাদ শিমুল:
ছেলের পিরোজপুরের ইন্দুরকানী বাজারের প্রাণকেন্দ্রে তিন তলা ভবন। অথচ মা থাকে ভাঙ্গা ঘরে। একটা বিছানাও নেই। ঠিকমত তিন বেলা খাবারও জোটে না বৃদ্ধ এ মায়ের কপালে।গত দুই মাস আগে ছেলে নজরুল ইসলাম নিজের তিনতলা ভবনে পরিবার নিয়ে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেছেন। কিন্তু মাকে রেখেছেন একটা ভাঙ্গা ঘরে। তিনি যে খাটটিতে ঘুমান তার নিচে ঘুমায় কুকুর। আর ঘরের চারদিকে ময়লা আবর্জনায় ছয়লাব। ঘরের মেঝেতে জমে আছে ময়লার ভাগার।
বৃদ্ধ এ মহিলার নাম সাফিয়া বেগম(৭৫)। দীর্ঘদিন ধরে অনাদরে অবহেলায় রোগাক্রান্ত বয়োবৃদ্ধ সাফিয়া মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। মৃত্যুও তার কাছে ভেড়ে না। তাই উপরওয়ালার দিকে তাকিয়ে সময় কেটে যায় তার। সাপিয়ার ছোট পেটে সন্তান নজরুলে জায়গা ঠিকই হয়েছিল। কিন্তু নজরুলের আলিশান ঘরে মায়ের জায়গা হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, নজরুল তার মায়ের অনেক সম্পদ লাভ করেছে। কিন্তু মায়ের তেমন কোন যত্ন সেবা করেন না।
নজরুলের ইন্দুরকানী থানার প্রবেশ পথে বেল তলার মোড়ে তিন তলা দালান রয়েছে। ভবনটির নিচতলায় রয়েছে তার নিজস্ব রেস্তোরা। দ্বিতীয় তলা ভাড়া দিচ্ছেন। আর তিন তলায় তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। তবে সাফিয়া বেগমের শাহিদা নামের এক মেয়েও আছে। দুই সন্তানই মায়ের যত্ন নিয়ে উদাস। এই শাহিদা ও নজরুল দুই ভাই বোনের মধ্যে মাকে সেবা যত্ন করার বিষ দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ নিয়ে কয়েকবার শালিশ বৈঠক হওয়ার পরেও সমাধান হয়নি।
জানা যায়, সাফিয়া বেগমের ইন্দুরকানী উপজেলা সদরে প্রায় কোটি টাকার সম্পদ ছিল এক সময়। দুই সন্তানের মধ্যে সে সম্পদ ভাগ করে দেয়া হয়। এর পরে মাকে দেখ ভালের বিষয়টিও ভাগা ভাগি করা সন্তানদের মাঝে। কিন্তু সম্পদ বেশি কমের হিসাবে সেবা যত্নেরও হিসাব করেন সন্তানরা। এক পর্যায়ে কেউ আর দায়িত্ব নিলেন না বৃদ্ধ মায়ের।
নজরুলের মত করে আমরা দিন দিন অমানবিক হয়ে যাচ্ছি। হারাচ্ছি মানবতা। আসুন আমরা মানবিক হই। এ মায়ের পাশে দাড়াই।

Comment here