নাজিরপুর

আকাশে মেঘ দেখলেই নাজিরপুরের বিদ্যুতের পলায়ন!

নাজিরপুর প্রতিনিধিঃ
আকাশে মেঘ দেখলেই বিদ্যুৎ পালিয়ে যায় পিরোজপুরের নাজিরপুরে! আর একটু ঝড়বৃষ্টি হলেতো কথাই নেই। দু-একদিনেও তখন বিদ্যুতের নাগাল পাওয়া যায়না। তাছাড়া দিনে রাতে অসংখ্যবার লোডশেডিংতো নিয়মিত ব্যাপার। এছাড়া মাঝেমধ্যে ঘোষনা দিয়ে, আবার অনেক সময় ঘোষনা ছাড়াই লাইন সংস্কারের নামে সারাদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়।
এটা হলো নাজিরপুর উপজেলার বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার হালচিত্র। বছরের পর বছর ধরে পিরোজপুর পল্লী বিদুৎ সমিতির এমন অব্যবস্থাপনায় একদিকে যেমন চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গ্রাহকদের, অন্যদিকে সরকারেরও ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন হচ্ছে।
কিছু দিন আগে দিনের পর দিন বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে খুঁটি ও তার পরিবর্তনসহ নানা সংষ্কার কাজ করা হয়েছে। কিন্তু এর পরেও সামান্য মেঘ-বৃষ্টি হলেই খুঁটিপড়ে যাওয়া বা তার ছিড়ে যাওয়ার অজুহাতে দিনের পর দিন বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হচ্ছে।
বর্তমান সরকারের আমলে সারা দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাপক উন্নতি ঘটলেও নাজিরপুর বরাবরই অতি মাত্রায় লোডশেডিং থেকেই যাচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকায় এলাকাবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। তারা এখন বলে আমাদের এখানের বিদ্যুৎ মাঝে মাঝে বেড়াতে আসে! এই আসে তো এই যায়। এ ছাড়া মিটার রিডিং নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। মিটার রির্ডিং ম্যান মিটার রিডিং করতে আসে না মনগড়া রির্ডিং করে দেয় এতে যে বাড়িতে বিল হওয়ার কথা ১০০ টাকা সেখানে আসে কোন কোন মাসে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বর্তমান এজিএম ফুয়াদ আল আরেফিন নাজিরপুর পল্লীবিদ্যুত অফিসে যোগদান করার পর থেকেই বিদ্যুৎ চলে যাওয়া, মিটার রিডিং নিয়ে বিল বেশি-কম হওয়া, নতুন লাইন সংযোগের নামে কালক্ষেপন করা, অফিসে দালালের দৌড়াত্ব বেড়ে যাওয়া। লাইনে সমস্যা হলে তা ঠিক করতে লাইনম্যানদের ঘুষ নেওয়া।
নাজিরপুরের ঐতিহ্যবাহী কালিবাড়ী বাজারের মান্নান ইলেক্টিক ইঞ্জিনিয়ারীং ওয়ার্কশপ এর ম্যানেজার মোঃ আলম এ প্রতিনিধিকে জানান,আমাদের ব্যবসাই হলো কারেন্টের, লেদ মেশিন, ওয়াল্লিং মেশিন, গ্রান্ডিং মেশিন সহ বিভিন্ন মেশিন কারেন্ট ছাড়া চালানো সম্ভব নয়। সামান্য মেঘের গর্জন বা বজ্র চমকালেই বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কিছু সময় পর মেঘ সরে গেলেও বিদ্যুৎ আর আসেনা। অনেক সময় সারা রাতেও বিদ্যুৎ না আসায় আমাদের এ বাজার অন্ধকারে ভুতুড়ে অবস্থায় পরিনত হয়। এমনকি অন্ধকারে বহুবার বাজার চুরির ঘটনাও ঘটেছে।
এ বিষয় নাজিরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার ফুয়াদ আল আরেফিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। তাই তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন বলেন মূলত ৩৩ কেবি ফোর্ত লাইনের ফল্ট থাকার কারনে বাগেরহাট থেকেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে আমরা কি করব। আর মিটার রিডিং এর অভিযোগের কথা বলছেন বিষয়টা হচ্ছে রিডিং করতে আমাদের অফিস থেকে বাড়িতে বাড়িতে যায় কম-বেশি হওয়ার কথা না কম হওয়ারই কথা তবে যদি বেশি হয় তাহলে আমাদের অফিসে আসলে সমাধান পাবে।
নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান জানান, নাজিরপুরে অতিমাত্রায় লোডশেডিং নিয়ে পল্লী বিদ্যুতের এজিএম এর সাথে বহুবার কথা হয়েছে। সবসময় তিনি টেকনিক্যাল সমস্যার কথা বলেন। যার কারনে আমাদের কিছু বলার থাকে না।

Comment here