ব্রেকিং নিউজ

অবশেষে ডাক্তার এইচ পি শিকদারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা

ফিরোজ মাহমুদ: সরকারি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে চাকরি করেন তাসলিমা বেগম। তার মেয়ে সিনথিয়া ইসলাম গর্ভধারণ করার পর থেকে মায়ের কর্মস্থল পিরোজপুর সরকারি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে কর্মরত ডাক্তার হংসপতি শিকদারের তত্বাবধায়নে নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা-নীরিক্ষা করাতেন। এক পর্যায়ে ডাক্তার হংসপতি শিকদার সিনথিয়া ইসলামকে সিজার করার জন্য তার মালিকানাধীন প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু প্রসূতি সিনথিয়া ইসলাম ডাক্তারের পরামর্শ না মেনে সিজারের জন্য পিরোজপুর সরকারি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ভর্তি হন। সেখানে কর্তৃপক্ষ সিজারের জন্য যাবতীয় আয়োজন সম্পন্ন করে প্রসূতিকে অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নিয়ে ডাক্তার হংসপতি শিকদারকে ডাকা হয়। ওটির টেবিলে সিনথিয়া ইসলামকে দেখে ডাক্তার হংসপতি রেগে যান এবং সেখানে তার অপারেশন হবেনা বলে মুমূর্ষু প্রসূতিকে ওটি থেকে বের করে দেন। পরে ওই দিন বেলা ২টার দিকে পিরোজপুরের নাজিরপুর সিনথিয়া ইসলামের নিজ উপজেলা সদরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে সিজার করেন।

২০১৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর এ ঘটনার রাতে তার মতো আর কোন প্রসূতিকে এ ধরনের হয়রানির শিকার হতে না হয় উল্লেখ করে সিনথিয়া ইসলাম তার ব্যবহৃত ফেসবুক আইডি থেকে ডাক্তারের বিচার দাবী করে আবেগঘন একটি পোস্ট দেয়। তখন এ ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

এ ঘটনায় ওই সময় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা তদন্ত হয়। উল্লেখ্য, ওই প্রসূতি সিনথিয়া ইসলাম নাজিরপুর উপজেলা সদরের বাসিন্ধা আরাফাত খানের স্ত্রী এবং পিরোজপুর জেলা পরিষদের সদস্য সুলতান মাহমুদ খানের পুত্রবধূ।

প্রায় দেড় বছর তদন্ত শেষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকার স্বারক নং ৫৯.০০.০০০০.১১৭.২৭.০৩২,১৭ (অংশ-১) ৫৩ তাং-১৪/০৭/২০১৯ মোতাবেক সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব জি এম সালেহ উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা-২০১৮ এর বিধি-৩, এর দফা (ক) মোতাবেক অসদাচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত করে বিভাগীয় মামলা রুজু হয়। একই চিঠিতে উল্লেখিত বিধিমালার ৪ (৩)স(ঘ) মোতাবেক ওই চিকিৎসকে সরকারি চাকুরী হতে বরখাস্ত করা হবে না বা উক্ত বিধিমালার আওতায় অন্যকোন উপযুক্ত দন্ড প্রদান করা হবে না সে সর্ম্পকে আত্মপক্ষ সমর্থনের নির্দেশ প্রদান করা হয়। ডাক্তার হংসপতি শিকদার বর্তমানে মেডিকেল অফিসার (এমসিএইচ-এফপি) রামপাল, বাগেরহাটে কর্মরত আছেন।

সিনথিয়া ইসলাম জানান, সে ডাঃ হংসপতি সিকদারের নিয়মিত রোগী ছিলো। তার মা পিরোজপুর সরকারি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে কর্মরত থাকার পরেও সেখানে তিনি সিজার করাতে পরেননি। তার উপর যে অবিচার করা হয়েছে এর জন্য কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন পরেও ডাক্তারের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে সে সন্তুষ্ট। তবে তিনি ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেন।

Comment here