নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে নারায়নগঞ্জ ফেরত ১৮ জনের দলটির সকলেই সুস্থ। ১৪ দিন অতিবাহিত হওয়ায় তাদের শনিবার সকাল ১১ ঘটিকায় অবমুক্ত করা হয়েছে।
স্বরূপকাঠি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকার আবদুল্লা আল মামুন বাবু তার ফেইসবুক আইডির মাধ্যমে বলেন, নারায়নগঞ্জ ফেরত ১৮ জনের যে দলটিকে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল, তারা সকলেই সুস্থ আছেন এবং সে অনুযায়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রত্যয়ন প্রদান করা হয়েছে। ইতোমধ্য ১৪ দিন অতিবাহিত হওয়ায় তাদের গতকাল (শনিবার) সকাল ১১ ঘটিকায় অবমুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৯ এপ্রিল সকালে নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে একটি ভাড়া করা ট্রলারে করে উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নসহ পাশ্ববর্তী এলাকার কিছু লোক বলদিয়া ইউনিয়নে আসে। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শহিন মিয়া প্রশাসনকে জানায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার আবদুল্লা আল মামুন বাবু ওই লোকদেরকে একটি বিদ্যালয়ে কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য বলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে ওই দিন বিকেলে নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ১৮ জনকে ইউনিয়নের কাটাপিটানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোয়ারেন্টাইনে রাখতে নিয়ে যায় ইউপি চেয়ারম্যান। এসময় ইউপি সদস্য সুখলাল ঢালী ও রনজিত বেপারীর নেতৃত্বে স্থানীয়রা বলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহিন মিয়া ও পুলিশের উপর চড়াও হয়। এলাকার কয়েকশ’ মানুষ লাঠিসোটা নিয়ে চেয়ারম্যান ও পুলিশের উপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। হামলায় সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা, পুলিশ সদস্য তাজেল, আল মামুন, ইউপি সদস্য মো. সুমন ও চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত গাড়ির চালক মাসুম বিল্লাহ আহত হয়। ঘটনার ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিক গোলাম মোস্তাফার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে পিটিয়ে পা ভেঙ্গে দেন হামলাকারীরা।
নির্বাহী অফিসার সরকার আবদুল্লা আল মামুন বাবু বলেন, যারা কাটাপিটানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারে এদের কোয়ারেন্টাইনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জঙ্গীদের মত আচরন করে পুলিশ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাংবাদিকদের লাঞ্চিত ও আহত করেছেন, তাদের জবাবটা এই মুহুর্তে জানা দরকার। ইউপি সদস্য জনাব সুখলাল এই জঙ্গীপনার মূল কারিগর কারণ তিনিই রটিয়েছিলেন যে কাটাপিটানিয়া প্রাইমারি স্কুলে করোনা আক্রান্ত রোগী কোয়ারেন্টাইন করা হচ্ছে এবং নিরীহ গ্রামবাসীকে ক্ষেপিয়ে দিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, অন্য ইউনিয়নের একজন ইউপি চেয়ারম্যান সহ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকের ভূমিকাও কম বিতর্কিত নয়। অনেকেই এটাকে সাম্প্রদায়িক ইসু বানানোর চেষ্টায় রত ছিলেন ও জাতীয় ইসু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছিলেন। উপরের পর্যায়ের কত মানুষের কাছে যে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। বিষয়টি নিয়ে মামলা পর্যন্ত হয়েছে।
এক শ্রেনীর পৌর নিবাসী অসচেতন নাগরিক মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এদের রাখার ব্যাপারে জঙ্গীপনা দেখানোর চেষ্টা করেছেন এবং স্থানীয় কাউন্সিলরকেও সাথে পেয়েছিলেন। প্রশাসনের শক্ত অবস্থানের কারনণ তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি।
এখনো কোন প্রতিষ্ঠানকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ঘোষণা করার সাথে সাথে এক দল স্থানীয় অধিবাসী তার বিরোধিতা করছেন। তাদের যুক্তির শেষ নেই। সনুদয়কাঠী ইউনিয়নে এখন পর্যন্ত এজন্য কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি।
স্বরূপকাঠিতে নারায়নগঞ্জ ফেরত ১৮ জনের দলটির সকলেই সুস্থঃ ১৪ দিন পর অবমুক্ত

Comment here