পিরোজপুরে সরকারী কার্যক্রমে অফিস-বিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা উড়ে নি

ঈদে মিলাদুন্নবীতে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি ভবনসহ দেশের বাইরেও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিষয়ে আইনের গেজেট থাকলেও তা মানা হয়নি পিরোজপুরের বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারি কার্যালয় ব্যাংক ও বিদ্যালয়গুলো। জেলা শহরের বিভিন্ন কার্যালয়ে সরজমিনের গিয়ে দেখা যায় অধিকাংশ সরকারি – বেসরকারি কার্যালয়ে উত্তোলন করা হয়নি জাতীয় পতাকা। রোববার (০৯ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও বিদ্যালয় ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, আজ সারাদেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী। এই সরকারী কার্যক্রমে প্রজ্ঞাপনে প্রতিটি অফিস-প্রতিষ্ঠানসমূহে জাতীয় পতাকা তোলার কথা ছিল। জেলা সিভিল সার্জন অফিস, জেলা শিক্ষা ভবন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা ভবন, পিরোজপুর সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়, জেলা সাব-রেজিষ্টারের কার্যালয়, সোনালী ব্যাংক জেলা শাখা, পূবালী ব্যাংক জেলা শাখা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয় জেলা কার্যালয়, দূর্ণীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড, ভ্যাট বিভাগ বিভাগীয় কর্মকর্তার কার্যালয়, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়, সদর উপজেলা রিসোর্স সেন্টার (ইউআরসি), টিআইবি- সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কার্যালয়, উপজেলা কৃষি অফিস, উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসসহ বিভিন্ন বিদ্যালয় ও সরকারী-বেসরকারী অফিসে হয়নি পতাকা উত্তোলন। এছাড়া বিভিন্ন বিদ্যালয় ও সরকারী-বেসরকারী অফিসে নাই পতাকা উত্তোলনের খুটি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কুমারেশ গাছী বলেন, আমি ছুটিতে রয়েছি। তাই আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।

তবে জেলা শিক্ষা অফিসার ইদ্রিস আলী আজিজি বলেন, আমি অফিস সহকারী মশিউর রহমানকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। কিন্তু সে কেনো কাজটি করেনি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। আমি একটি প্রোগ্রামে ব্যাস্ত থাকায় বিষয়টি খোঁজ নিতে পারিনি।

সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন মাঝি বলেন, আমি কোন চিঠি না পাওয়ায় বিষয়টি জানিনা। তাই পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। জানলে তো পতাকা উত্তোলন করতাম। আমি এখনই টানানোর ব্যবস্থা করছি।

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. হাসনাত ইউসুফ জাকি বলেন, আমি বিষয়টি তো জানিনা। দেখতে হবে তাহলে এটা। এর আগেও এসময় অফিসে পতাকা আগে তোলা হয়েছে বলে আমার মনে নাই। এটা বাধ্যতামূলক কিনা তাও দেখতে হবে।

টিআইবির এরিয়া কো-অর্ডিনেটর এম জহিরুল কাইউম বলেন, আমি ছুটিতে থাকায় বিষয়টি জানিনা। আর প্রজ্ঞাপনটাও দেখতে হবে। আমি অফিসে খোঁজ নিয়ে দেখছি পতাকা উত্তোলনের বিষয়টি। পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জনাব মনিরা পারভিন জানান, পতাকা উত্তোলনের জন্য সকল অফিস প্রধানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তারপরও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা না হলে তা আইনের ব্যতয়।

প্রসঙ্গত গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে এখন থেকে বাংলাদেশের সব সরকারি-বেসরকারি ভবনসহ দেশের বাইরে রাষ্ট্রীয় অফিস এবং মিশনগুলোতে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে। এছাড়া ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বরসহ সরকারের নির্দেশক্রমে অন্য দিনগুলোতেও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে।