পিরোজপুর সদর

পিরোজপুরের কদমতলায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে ওসিসহ আহত ২০

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পিরোজপুরের কদমতলায় বিবাদমান দুই ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ওসিসহ ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। শনিবার রাতে সদর উপজেলার কদমতলা বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
আহতদের পিরোজপুর জেলাসহ নাজিরপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর লোকজন বোমা হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটিয়েছে বলে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার আহত কর্মীরা দাবি করছেন। হামলায় আহত স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা চিকিৎসা নিতে জেলা হাসপাতালে যেতে চাইলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন তাদের বাধা দেয় বলে অভিযোগ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার কদমতলা ইনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. হানিফ খান এবং একই ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সিহাব হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে পুরানো বিরোধের জের ধরে এ সংঘর্ষ হয়। এতে থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) মো. সোবাহান হোসেন ও এক পুলিশ সদস্যসহ ২০ জন আহত হয়েছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থীর (আনারস প্রতীক) আহতরা হলেন মো. সিহাব হোসেন (৬০), তার কর্মী হাসান শেখ (২৮), হাফিজ শেখ (৩৫), সাঈদ শেখ (৩৭), ইয়াসিন মোল্লা (২৪), মো. আজমীর খান (২২), মো. য়িাজুল শিকদার (১৮), মো. ইমাম শেখ (২১), শেখ মো. ফারুক (৪০) মো. শহিদুল ইসলাম (৫৫), মুনান শেখ (৩০)। এ ছাড়া অপর পক্ষের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. হানিফ খান (৪৫), তার কর্মী স্থানীয় মিজান শেখ (৩৮) তন্ময় গাজী (২০), মুনান খান (১৯), তাজুল ইসলাম, লিটন খান (৪০)। গুরুতর আহত মিজান ও মুনানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনায় পাঠানো হয়েছে।
সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. সোবাহান হোসেনসহ এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ জ ম মাসুদুজ্জামান মিলু এ খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানান, সংঘর্ষের সময় ইট-পাটকেল নিক্ষেপেরে ফলে তারা আহত হন।
পিরোজপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তন্ময় মজুমদার বলেন, আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গুরুতর আহত দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী আহত মো. আজমির খান বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সিহাব হোসেন কদমতলা বাজার জামে মসজিদে এশার নামাজ পড়তে যান। সেখান আমিসহ কিছু লোক তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এ সময় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. হানিফ খানের নেতৃত্বে ২৫/৩০ জন লোক আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে গুলিবর্ষণসহ বোমা হামলা করে এবং কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। এ সময় আমরা চিকিৎসা নিতে জেলা হাসপাতালে যেতে চাইলে হামলাকারীরা আমাদের বাধা দেয়। পরে আহতদের নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. হানিফ খান এ হামলায় তার সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি ওই রাতে কদমতলা বাজারের থাকা ইউনিয়ন আওয়মী লীগের দলীয় কার্যালয়ে কর্মীদের নিয়ে কথা বলছিলাম। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সিহাব হোসেনের নেতৃত্বে তার ২৫/৩০ জন কর্মীরা এসে আমিসহ কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমার ৮ কর্মী আহত হয়। আহতদের জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মো. হায়াতুল ইসলাম খান জানান, পরিস্থিতি এখন পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ধাপে কদমতলা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ খান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সিহাব হোসেন শেখ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

Comment here