ব্রেকিং নিউজ

শোক দিবসে পতাকাহীন পিরোজপুর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

জাতীয় শোক দিবসের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় দিনেও পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পিবিপ্রবি) জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করার ঘটনায় ব্যাপক আলোচনা, বিতর্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাটিকে ‘ভুল’ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হলেও স্থানীয়দের একটি অংশ এর পেছনে ভিন্ন কারণ দেখছেন এবং বিষয়টি নিয়ে গভীর সন্দেহ প্রকাশ করছেন।
২০ ডিসেম্বর (শনিবার) সারা দেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালিত হলেও পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দুপুর ২টা ১৪ মিনিট পর্যন্ত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। বিষয়টি চোখে পড়লে গণমাধ্যমকর্মীরা প্রশাসনিক ভবনে দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে জানতে চান।
এ সময় প্রশাসনিক ভবনে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মী মো. পারভেজ ইসলাম জানান, জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না এবং এ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনাও তাকে দেওয়া হয়নি।
ঘটনার ব্যাখ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক (ফিন্যান্স) আরাফাত হোসেন বলেন,
“বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ভুলবশত নিরাপত্তা কর্মীরা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেননি। এটি ইচ্ছাকৃত নয়।”
তবে প্রশাসনের এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন স্থানীয় সচেতন মহল ও সাধারণ জনগণের একটি অংশ। তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন (পূর্বে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) এবং শহীদ হাদি হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের মধ্যে দলীয়ভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কিছু কর্মকর্তার মধ্যে শোক দিবস পালনে এক ধরনের অনীহা কাজ করছে। সেই অনীহার বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই জাতীয় শোক দিবসে পতাকা উত্তোলন এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তাদের ধারণা।
গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর ক্যাম্পাসজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসন দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে তড়িঘড়ি করে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় শোক দিবসের মতো রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি পালনে এমন চরম অবহেলা কীভাবে সম্ভব?
সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন মহল থেকে এই ঘটনার পেছনের প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে স্বচ্ছ তদন্ত, দায়ীদের চিহ্নিতকরণ এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যার দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে সরকারি প্রতিষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় দিবস পালনে দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

Comment here