নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে স্ট্যান্ড রিলিজ হলেন পিরোজপুর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবিএম জাহিদ হোসেন। তাকে ভোলার দৌলতখান উপজেলায় যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ১৩ নভেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। তবে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি।
তার বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য, এমপিওর আবেদন পাঠাতে ও বিএড স্কেলভুক্ত করাতে শিক্ষকদের কাছে টাকা দাবি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি অনুমোদনে মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও শিক্ষক নিয়োগ কমিটিতে তাকে রাখা না হলে এমপিও’র কোন কাগজে স্বাক্ষর করতে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষকরা।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষকেরা জানান, নতুন শিক্ষক নিয়োগে জাহিদ হোসেনকে ৫০ হাজার থেকে এক লক্ষ পর্যন্ত টাকা দিতে হত। প্রতিষ্ঠান ও পদ বুঝে এর পরিমাণ আরও বাড়ত। এছাড়া বিএড এর স্কেল করাতে দিতে হত পাঁচ হাজারের বেশি টাকা। শুধু তাই নয়। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন দিতেও তিনি নিতেন মোটা অংকের টাকা। এছাড়া কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্রে কিছুটা ত্রুটি পেলে তো কথাই নাই। তবে জাহিদ হোসেনের এসব দুর্নীতির ব্যাপারে শিক্ষকদের ক্ষোভ থাকলেও, হয়রাণির ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে কখনো মুখ খোলেননি।
ভূক্তভোগী এক শিক্ষক জানান, তিন মাস পর পর এমপিও দেয়া হয়। তাই একটি এমপিও বাদ গেলে, একজন শিক্ষকের অনেক ক্ষতি হয়। আর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অনলাইনে আবেদনকৃত কাগজপত্র তার আইডি থেকে ফরওয়ার্ড না করলে, ওই এমপিও পাওয়ার কোন সুযোগ নাই। তাই বাধ্য হয়েই আমরা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘুষ দিই। কিন্তু জাহিদ হোসেনের ঘুষের চাহিদাটা অনেক বেশি ছিল। মাত্রাতিরিক্ত ঘুষ নেওয়ার কারণে তিনি পিরোজপুরে ঘুষের একটি মডেলে পরিনত হয়েছিলেন। তাই বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসার পর তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। তবে সাধারণ শিক্ষকদের দাবি পিরোজপুর সদর উপজেলায় জাহিদ হোসেন এর মত আর কোন ঘুষখোর শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়া না হয়।
স্ট্যান্ড রিলিজের বিষয়টি স্বীকার করে জাহিদ হোসেন দাবি তিনি দুর্নীতিমুক্ত আছেন। এ বিষয়ে নিশ্চয়তা নেয়ার জন্য তিনি সদর উপজেলার নির্ধারিত কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সাথে কথা বলতে বলেন।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সুনীল চন্দ্র সেন জানান, ভোলার দৌলতখানে বদলির আদেশ স্থগিত করে যাতে জাহিদ হোসেনকে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া কিংবা কাউখালী উপজেলার শূন্য পদে বদলি করা হয় এজন্য মাউশি’র মহাপরিচালক বরাবর একটি আবেদন পাঠিয়েছিলেন। তবে জাহিদ হোসেনের এ আবেদন গ্রহন করা হয়নি।
Comment here